ডেস্ক নিউজ:
পর্যটন মৌসুম প্রায় চলে এসেছে। এজন্য থানচি উপজেলায় পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য বান্দরবান জেলা প্রশাসন কাজ করছে। পাঁচতলা আবাসিক হোটেল নির্মাণ ও দুটি রেস্টহাউজ সংস্কার ও একটি রেস্টহাউজ নির্মাণের কাজ চলছে। উপজেলা পরিষদের চারতলায় পর্যটকদের জন্য বরাদ্দ আছে রুম।
বান্দরবানের থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে বাজারের রেস্টহাউজ ও ইউনিয়ন পরিষদের রেস্টহাউজ সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়া বাজারে ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি পাঁচতলা আবাসিক হোটেলের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এখানে প্রায় ২৪টির মতো রুম থাকবে। উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে তৈরি হচ্ছে বাজার শেড কাম রেস্টহাউজ। সেখানেও পর্যটকরা থাকতে পারবে। এছাড়া উপজেলা পরিষদের চারতলায় পর্যটকদের জন্য রাখা হয়েছে দুই-তিনটি রুম।’
বান্দরবান জেলার একটি দুর্গম এলাকা থানচি। এখানকার নীল দিগন্ত, ডিম পাহাড়, নাফাকুম, বড় পাথরসহ নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য দেশ-বিদেশ থেকে হাজারও পর্যটক ভিড় করেন। এসব পর্যটন কেন্দ্রে নদী, পাহাড়, ঝরনা দেখে মুগ্ধ হন সবাই।
নাফা খুমবান্দরবান সদর থেকে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে অবস্থিত থানচি উপজেলা। এখানকার পর্যটন কেন্দ্রগুলো ভ্রমণপিপাসুদের কাঙ্ক্ষিত হলেও ভালো ও পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা নেই। এ কারণে সারাদিন বেড়ানোর পর ক্লান্ত থাকলেও জেলা সদরে ফিরে আসতে হয় তাদের।
থানচি ঘুরে আসা পর্যটক মো. জাকারিয়ার কথায় সেই সমস্যা বোঝা গেলো। রেমাক্রি বাজার থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পায়ে হেঁটে নাফাকুম পর্যটন কেন্দ্রে গিয়েছিলেন তিনি। ঘণ্টাখানেক ঘোরাঘুরির পর আবারও আড়াই ঘণ্টা হেঁটে রেমাক্রি বাজারে পৌঁছাতে হয় তাকে। সেখানে বাধ্য হয়ে পাহাড়িদের মাচাং ঘরে ঘুমিয়েছেন। পরদিন ভোরে বান্দরবান সদরে ফেরেন তিনি। তার কথায়, ‘আবাসিক ব্যবস্থা ভালো হলে সেখানে আরামে বিশ্রাম নেওয়া যেতো।’
বড় পাথরস্থানীয়দের মন্তব্য, ২০১২ সালের ১৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাঙ্গু নদীর ওপর নতুন সেতু উদ্বোধন করার পর সড়ক যোগাযোগ উন্নত হয়। ফলে থানচিতে পর্যটকরা আসতে শুরু করেন। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর একসময় অবহেলিত দুর্গম এই উপজেলার আধুনিকায়ন হয়েছে। তবে ভালো আবাসন থাকলে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
থানচির বাসিন্দা সাথুই অং মারমা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, উপজেলাটি এখন আর আগের মতো দুর্গম নয়। সড়ক পথে বান্দরবান থেকে তিন ঘণ্টায় এ উপজেলায় সহজেই পৌঁছানো যায়। কিন্তু ভালো আবাসনের অভাবে অনেকেই ঘুরতে এসে না থেকে চলে যায়। তার মন্তব্য, ‘একটু উন্নত থাকার ব্যবস্থা হলে পর্যটক বাড়তো, একইসঙ্গে উপজেলার উন্নয়ন হতো।’
নীল দিগন্তউপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, ‘থানচিতে যেসব পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে নীল দিগন্তে কিছু উন্নয়ন কাজ চলছে। সেখানে কিছু কটেজ বানানোর পরিকল্পনা আছে প্রশাসনের। এছাড়া ডিম পাহাড়ে উন্নয়ন কাজ চলছিল। জমি সংক্রান্ত কিছু সমস্যার কারণে বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে দ্রুত আবারও কাজ শুরু হবে।’
বড় পাথরএদিকে বান্দরবান জেলা প্রশাসন থেকে থানচি বাজার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাজারে পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন বাধ্যতামূলক। এগুলো না মানলে কিছুদিন পর থেকে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।